অতীতের মত কোন স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না, এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস।
৫ আগস্ট ( মঙ্গলবার) উপলক্ষে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেএ বিষয়টি জানান।
মোহাম্মদ ইউনূসের ভাষ্যমতে,‘‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো দেখায়- একটি ন্যায় ও সাম্য ভিত্তিক বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারে যে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে তা আমাদের যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে হব ’’।
স্বৈরাচারী দল ও তার স্বার্থপরী গোষ্ঠী এখনো দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে প্রকর ভাবে লিপ্ত আছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচারীর ষড়যন্ত্র মোকাবিলা পড়তে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন একটা দেশ গড়ে তুলি যেখানে থাকবে না স্বৈরাচার হবে না কোন স্বৈরাচারের ঠাই’’।
গণঅভ্যুত্থান দিবস কে উল্লেখ্য করে অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন আজ (৫ আগস্ট )।
আজ থেকে এক বছর আগের এই দিনে জুলাই-গন অভ্যুত্থানের পূর্ণতা পায়। দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীর কবর থেকে মুক্তি পায় প্রিয় দেশ।
বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ , যাদের সক্রিয় আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধান উপদেষ্টা তার মন্তব্যে আরো বলেন, আজ আমি স্মরণ করছি আমার দেশে সেই সকল সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর, পেশাজীবী সহ সকল ক্ষেত্রে মানুষদের যারা ফ্যাসিবাদের শক্তিকে মোকাবেলা করতে গিয়ে নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন, ‘‘করে নিয়েছেন শাহাদাত বরণ।
আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা স্মরণ করি সকল জুলাই যোদ্ধাকে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে বরণ করেছেন পঙ্গুত্বকে হারিয়েছেন দৃষ্টি শক্তি। জাতি তাদের অবদান শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে আজীবন’’।
গণঅভ্যুত্থানের শাহাদাত বরণকারী ও তার পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস।
১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান।
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, স্বৈরাচার মুক্ত ও দুর্নীতিবিহীন নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্রকে পূর্ণ উদ্ধার করে রাষ্ট্রের জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।
অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বৈষম্যহীন স্বৈরাচার মুক্ত ও দুর্নীতিবিহীন রাষ্ট্র গড়তে রাষ্ট্রতন্ত্রের সব খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন বলে জানান তিনি।
জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, জুলাই শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিশেষে প্রধান উপদেষ্টা জানায়,‘‘ আমাদের গণতান্ত্রিক পথচলাকে ত্বরান্বিত করতে নির্বাচন ব্যবস্থার ও রাজনৈতিক এছাড়া প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীদারদের সাথে আলোচনা পর্যালোচনা চলমান আছে।
যা একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, নির ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে পারবে এবং এ বিষয়ে অন্তবর্তী কালীন সরকার দীর্ঘ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও অঙ্গীকারবদ্ধ’’।
