জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর সমাবেশ ঘিরে গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ এর ঘটনা ঘটে। ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সংগঠন আওয়ামী লীগ এই ঘটনা ঘটায়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গতকাল গোপালগঞ্জ জেলায় পদযাত্রা এবং সমাবেশের তারিখ ছিল। এনসিপির শীর্ষ নেতা কর্মীদের হত্যা করতে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসবাদ এর মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীরা এরূপ ঘটনা ঘটায় বলে নেটিজেনদের মতামত।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে কারফিউ জারি করা হয়। রাতের পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালেও শহরজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গোপালগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সকাল থেকে গোপালগঞ্জ শহরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবহন কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এখনো শহর জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে সড়কে সাধারণ মানুষ ও খেটে খাওয়া পেশাজীবী মানুষের চলাচল দেখা যাচ্ছে।
পরিবহন শ্রমিক আজগার আলী শেখ বলেন, কারফিউয়ের কারণে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। তাই লোকাল গাড়িগুলো বন্ধ রয়েছে।
গোপালগঞ্জ-ব্যাশপুর, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট রুটের বাসগুলো বন্ধ। তবে ঢাকা সহ অন্যান্য দূরপাল্লার গাড়িগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।
গতকাল দুপুর ২ টার দিকে গোপালগঞ্জ সমাবেশ শেষ করে মাদারীপুর ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা করে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। এ সময়ে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের তৎপরতায় এনসিপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এবং প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে পুলিশ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলে। এই সকল নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে, ককটেল ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে পুলিশের উপর হামলা চালায়।
পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট এবং টিয়াশেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি অবনতি হলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এবং সেনাবাহিনীর তৎপরতায় এনসিপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের বিকেল ৫ টার দিকে খুলনা নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার পরে তাৎক্ষণিক গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত ও সাংবাদিক-পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
