সরকারি চাকরির অবসরের ক্ষেত্রে বয়স না বাড়ানোর বিষয়ে সরকার যখন কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দিতে চায় না কোন ছাড়, এবং পালন করতে চায় জিরো টলারেন্স নীতি।
তখন বিশেষভাবে শ্রেণীভুক্ত সরকারি কোম্পানি বা কর্পোরেশন নিজেদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিচ্ছে অবসরের সময়। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অসন্তুষ্টির।
সাধারণভাবে সরকারি চাকরিজীবীদের বড় অংশই যখন অবসর নিতে বাধ্য হচ্ছে ৫৯ বছরে তখন সরকারি বিভিন্ন সংস্থা যেমন পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা অবসর নিচ্ছে ৬২ বছর বয়সে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলিতেও পরিলক্ষিত হচ্ছে একই ধরনের চিত্র।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) তাছাড়া ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) কর্মচারীদের অবসরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ বছরে।
কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর হলেও এই সকল কোম্পানির পরিচালকদের অবসরের সময় ৬২ বছর। তবে আগে এই বয়স ছিল ৬৫ বছর।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হচ্ছে এই বৈষম্যমূলক অবসর নীতি। তাদের অবসরের ক্ষেত্রে বাড়িয়েছেন ৬ বছর। ৫৯ এর জায়গায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা অবসরে যান ৬৫ বছর বয়সে।
অন্যদিকে চাকরি শুরুর বিলম্বতার যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে আগে থেকেই বেশি বয়সে অবসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের বিচারপতিরা। বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৭ বছর। যা বাংলাদেশের অবসরে যাওয়ার সময়সীমার সর্বোচ্চ হিসাবে নির্ধারিত। তবে এটি আগে ছিল ৬৫ বছর।
উচ্চ পর্যায়ের অবসরের বয়সসীমায় এই বৈষম্য অধিকাংশ সরকারি কর্মচারীদের জন্য অসন্তুষ্টির কারণ, এবং যা সৃষ্টি করছে বিভিন্ন ধরনের বিশৃংখলা। অবসরের বয়স বৃদ্ধির সুবিধাভোগীদের পক্ষে যুক্তিক হাজারো কারণ থাকলেও দিন শেষে একশ্রেণীর মানুষকে হতে হচ্ছে বৈষম্যের শিকার।
আর এই বৈষম্য যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে ধনী-গরীর, উঁচু-নিচু, ক্ষমতাসীল ও দুর্বলদের মধ্যে। তাই কারণ যতটাই যৌক্তিক হোক না কেন অসন্তুষ্টি ও অভিযোগ থেকেই যাবে ৫৯ বছরে অবসরপ্রাপ্ত সকল সরকারি কর্মচারীদের অন্তরাত্মায়।
